আশ্রয়প্রার্থীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন, ক্ষতিপূরণ দিতে হোম অ্যাফেয়ার্সকে নির্দেশ

General view of the perimeter fence of the North West Point Detention Centre on Christmas Island, Wednesday, March 6, 2019.

General view of the perimeter fence of the North West Point Detention Centre on Christmas Island, Wednesday, March 6, 2019. Source: AAP

প্রায় ১০.০০০ আশ্রয়প্রার্থীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন হওয়ায় ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্সকে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আইনজীবীরা বলেছেন এই সিদ্ধান্ত অস্ট্রেলিয়ায় এবারই প্রথম। এই সিদ্ধান্তের তথ্য বেশ কয়েকটি ভাষায় প্রকাশিত হবে যাতে অভিযোগকারীদের জন্য বুঝতে সহজ হয় এবং বিষয়টিতে তারা অবগত থাকে।


গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে শরণার্থীদের এই ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ হয়েছিল সাত বছর আগে, এতে ৯,২৫১ জনের ব্যক্তিগত তথ্যের ডাটা প্রকাশ হয়ে গিয়েছিলো। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের এই ঘটনা অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘটনাগুলোর একটি।  

এক প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ইনফরমেশন কমিশনার নিশ্চিত হয়েছেন যে ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স ভুল করে ইমিগ্র্যাশন ডিটেনশনে বন্দিদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে তথ্য প্রকাশ করে।  

আইনি সহায়তা প্রতিষ্ঠান স্লেটার এন্ড গর্ডন এবং রেফিউজি এডভাইস এন্ড কেসওয়ার্ক সার্ভিস বা আরএসিএস এসাইলাম সীকারদের পক্ষে ইনফরমেশন কমিশনারের কাছে অভিযোগ দায়ের করে।  

রেফিউজি এডভাইস এন্ড কেসওয়ার্ক সার্ভিস-এর ডিরেক্টর সারাহ ডেল বলেন, ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্সকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের জন্য সঠিকভাবেই দায়ী করা হয়েছে।  

২০১৪ সালে ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে একটি ডিটেনশন রিপোর্ট অননুমোদিতভাবে প্রকাশ হয়, যেখানে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হয়। 

তখনকার ইমিগ্র্যাশন মিনিস্টার স্কট মরিসন বিষয়টিকে 'অগ্রহণযোগ্য' বলে অভিহিত করে বলেছিলেন, এই তথ্য পাবলিক ডোমেইনে প্রকাশ করার কথা ছিল না। 

অস্ট্রেলিয়ার প্রাইভেসী রেগুলেটর তদন্ত করে দেখেন ওই প্রতিবেদনে অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখন্ড ও খ্রীষ্টমাস আইল্যান্ডের শরণার্থীদের এমন ব্যক্তিগত তথ্য ছিল যার মাধ্যমে তাদেরকে চিহ্নিত করা যেত।  

এতে তাদের নাম, লিঙ্গ পরিচয়, জন্ম তারিখ, সিটিজেনশিপ, লোকেশন, নৌকায় করে আসার বিস্তারিত এবং ইমিগ্র্যাশন ডিটেনশনে যে সময় তারা থেকেছে তার বিবরণ দেয়া ছিল। 

কমিশনার এঞ্জেলিন ফক বলেন, ভুক্তভোগীদের বিষয়ভেদে তাদের আর্থিক লোকসানের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। 

মিজ ডেল বলেন, এই গোপনীয়তা লঙ্ঘনের ফলে যে বেদনা এবং ভোগান্তি হয়েছে তা এখনো ভুক্তভোগীরা অনুভব করছে, আগামী দিনগুলোতেও করবে।     

কমিশনার বলেন, ভুক্তভোগীরা তাদের ক্ষতির বিষয়টি দেখতে পারলে ৫০০ ডলার থেকে ২০,০০০ ডলারেরও বেশি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, এই ক্ষতিপূরণের জন্য পাঁচটি ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হয়েছে।  

ডাটা গোপনীয়তা লঙ্ঘনের ফলে উদ্বেগ, ভয়, বেদনা, ভোগান্তি, অশান্তি, অপমান বা মানসিক স্বাস্থ্যের কারণে উৎকণ্ঠা ইত্যাদি বিষয়গুলো দেখা হবে।  

ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স ২০১৪ সালে অভিযোগকারীদের কাছে অনুনোমোদিতভাবে তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের জন্য ক্ষমা চেয়েছে।  

স্লেটার এন্ড গর্ডনের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট এবোনি বার্সাল বলেন, ব্যাপক পর্যায়ে গোপনীয়তা লঙ্ঘনের জন্য অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে এই প্রথম ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেয়া হলো।  

অস্ট্রেলিয়ান ল'ইয়ার্স এলায়েন্সের গ্রেগ বার্নস বলেন, এটা খুবই উদ্বেগের যে সিস্টেমের মধ্যে দিয়ে এই দাবী নিস্পত্তি হতে সাত বছর লেগে গেছে। 

এই সিদ্ধান্তের বিষয়গুলো ২১টি ভাষায় প্রকাশিত হবে যাতে অভিযোগকারীরা সিদ্ধান্তগুলো সঠিকভাবে অবগত হয়েছে তা নিশ্চিত করা হয়।  

ক্ষতিপূরণ পাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে এক বছর লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

পুরো প্রতিবেদনটি শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন 

আরো দেখুনঃ




Share