যৌন নিপীড়নের শিকার একজন বলেছেন যে এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এদিকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
যৌন নিপীড়নের শিকার ব্যক্তি এবং অধিকার কর্মীরা সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যৌন নির্যাতন ও এর প্রভাবগুলি মোকাবেলা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
একটি নতুন সমীক্ষায় যৌন নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা, সেইসাথে এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ভূমিকা তুলে ধরেছে।
জরিপ উত্তরদাতাদের মধ্যে বেনামী একজন তার অভিজ্ঞতার কথা জানাচ্ছেন।
তিনি বলছেন, আমাদের এক বন্ধুর কঠিন সময় যাচ্ছিল। তাকে সঙ্গে দিতে আরো এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে নিয়ে সীমিতভাবে মদ্যপান করতে যাই। কিন্তু আমাকে আরো বেশি পান করার জন্য চাপ দেয়া হয় এবং এক পর্যায়ে বন্ধুর এপার্টমেন্টে ফিরে গেলে আমি দুজনের দ্বারা একই সময়ে লাঞ্ছিত হই।
ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া মেয়েটি বলেছে যে তাকে নিপীড়ণের জন্য সহায়তা পেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অভিযোগ করলেও, সে কখনই সাড়া পায়নি।
স্টপ (STOP) ক্যাম্পেইনের 'হ্যাশট্যাগ আই ডিজার্ভ সেফটি' (#IDeserveSafety Survey)-তে ৫২ জন ভুক্তভোগী উত্তর দিয়েছে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল এবং বাসস্থানে তাদের সহিংসতা এবং নির্যাতনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছে।
এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে একটি আবেদন জমা দেয়া হয়েছে যার লক্ষ্য হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশে ক্ষতি এবং সহিংসতা কমাতে সংস্কারের জন্য অভিজ্ঞতা এবং সুপারিশ সহ একটি অস্ট্রেলিয়ান ইউনিভার্সিটিজ অ্যাকর্ড প্যানেল প্রদান।
স্টপ ক্যাম্পেইনের প্রতিষ্ঠাতা, ক্যামিল শ্লোফেল বলেছেন যে প্রতিষ্ঠানগুলি সমস্যাটিকে হালকাভাবে নিচ্ছে।
স্টপ ক্যাম্পেইন চেয়ার অড্রে মিমস বলেছেন যে শিক্ষার্থীদের আবাসন এবং ক্যাম্পাসের আবাসনগুলো যৌন নিপীড়নের সবচেয়ে সাধারণ স্থানগুলির মধ্যে একটি। কিন্তু যাদের এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার কথা, তারা কিছুই করেন না।
মিজ মিমস বলেন আবাসিক হল এবং শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা পরিচালনাকারীদের জবাবদিহি করা উচিত।
অস্ট্রেলিয়ার মানবাধিকার কমিশন পরিস্থিতিটিকে উদ্বেগজনক বলে বর্ণনা করেছে।
এবং মিসেস শ্লোফেল বিশ্বাস করেন যে যৌন নির্যাতনের প্রভাব সারাজীবন স্থায়ী হতে পারে।
তিনি বলছেন, উত্তরদাতাদের অনেকেই আত্মহত্যা, বিষন্নতা, উদ্বেগের মধ্যে কাটিয়েছে, এবং এমনকি হাসপাতালে ভর্তির কথাও বলেছে, যার প্রভাব ক্ষতিকর, এবং এতে দেখা যায় যে যৌন সহিংসতার এই অভিজ্ঞতাগুলি দীর্ঘ মেয়াদে প্রভাব ফেলে৷
সমীক্ষায় একজন বেনামী উত্তরদাতা বলেছেন যে যৌন নিপীড়ন সম্পর্কে আরও সচেতনতা থাকা উচিত।
তিনি মনে করেন যে বেশিরভাগ অপরাধীরা যৌন নির্যাতনের পরিণতি সম্পর্কে অবগত নয়।
তিনি বলছেন, যারা আমাকে লাঞ্ছিত করেছিল তারা আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু, এবং তাদের বিশ্বাস করতাম৷ তারা খারাপ মানুষ ছিল না, কিন্তু তারা যে কাজটা করছে সেটা ভুল - এই উপলব্ধিই তাদের ছিল না। এবং তাদের এই অপকর্মটি যে ঘটনার শিকার মানুষটির জীবনে যে প্রভাব ফেলতে পারে এটা তারা বুঝতে পারে না। এটা এ বিষয়ে জ্ঞানের অভাব এবং শিক্ষার অভাব।"
মিজ মিমস বলেছেন যে হ্যাশট্যাগ আই ডিজার্ভ সেফটি (#IDeserveSafety) আবেদনের মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের কাছে ২৫ টি সুপারিশ করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে শিক্ষামন্ত্রী জেসন ক্লেয়ার বলেছেন পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলছেন, (বিশ্ববিদ্যালয়) ক্যাম্পাস সকল স্টাফ এবং শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ জায়গা হতে হবে - যৌন নিপীড়ন একটি গুরুতর বিষয়। এটা পরিষ্কার যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এ বিষয়ে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। একর্ড টিম বলেছে এজন্য চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করা যাবে না। তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখতে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যারা কার্যকর করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দেবে।
এ বিষয়ে যারা আরো সহায়তা চান, তারা 1800RESPECT-এ সপ্তাহের সাত দিনই যে কোন সময়ে কল করতে পারেন।
আরও দেখুন
কর্মক্ষেত্রে যৌন নিগ্রহ এবং আপনার অধিকার