আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রী সংখ্যার ক্যাপ প্রবর্তন করতে ব্যর্থ হয়ে লেবার সরকার সংসদের মধ্য দিয়ে না গিয়ে একই ধরনের ফল পেতে একটি নতুন উপায় খুঁজে পেয়েছে।
এজন্য অভিবাসন কর্মীদের অফশোর স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনকারীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া ধীর করার জন্য অনুরোধ করেছে। তবে এই ব্যবস্থা শিক্ষা খাত সংশ্লিষ্টদের এবং বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়েছে।
নতুন নীতির অধীনে, একবার কোন বিশ্ববিদ্যালয় সরকার কর্তৃক প্রয়োজনীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী সংখ্যার কোটা পূরণ করলে, অভিবাসন কর্মীরা সম্ভাব্য শিক্ষার্থীদের অফশোর ভিসা আবেদন প্রক্রিয়াকরণের গতি কমিয়ে দেবে।
নীতিটি একটি বিলের পরিবর্তে একটি মন্ত্রী পর্যায়ের নির্দেশনার মাধ্যমে প্রয়োগ করা হবে, যার অর্থ এটি কার্যকর করার জন্য সংসদে কোয়ালিশন বা গ্রিনস কারো সমর্থন পাওয়ার প্রয়োজন নেই।
ফেডারেল অর্থমন্ত্রী ক্যাটি গ্যালাঘের বলেছেন যে এই ব্যবস্থাটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী সংখ্যার নিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি নিশ্চিত করবে।
এই মন্ত্রী পর্যায়ের নির্দেশনা ১৮ ডিসেম্বর থেকে জারি করা হয়, এজন্য সরকার একটি বিদ্যমান নির্দেশনা প্রত্যাহার করে যা শিক্ষা সেক্টরে বিতর্ক সৃষ্টি করে।
এক বছর আগে জারি করা মন্ত্রিপরিষদ নির্দেশিকা ১০৭-এর মাধ্যমে অভিবাসন কর্মীদের অনুরোধ করা হয়েছিল যে নিম্ন ঝুঁকির দেশগুলি থেকে কম ঝুঁকি হিসাবে বিবেচিত প্রতিষ্ঠানগুলিতে ভিসার আবেদনগুলিকে অগ্রাধিকার দিতে।
ফেডারেল শিক্ষামন্ত্রী জেসন ক্লেয়ার এটিকে 'ডি ফ্যাক্টো ক্যাপ' হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় সেক্টরের শীর্ষ সংস্থা ইউনিভার্সিটিজ অস্ট্রেলিয়া বলেছে যে এই নির্দেশনা রিজিওনাল এবং ছোট বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বিশাল আর্থিক প্রভাব ফেলেছে।
নির্দেশিকা ১০৭ এর অধীনে, ২০২৩ থেকে ২০২৪ আর্থিক বছরে প্রদত্ত স্টুডেন্ট ভিসার সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে, যা আগের আর্থিক বছরের তুলনায় ৬০,০০০ ভিসা কম।
অ্যালেক ওয়েব রিজিওনাল বিশ্ববিদ্যালয় নেটওয়ার্কের সিইও।
তিনি সরকারকে নির্দেশিকা ১০৭ বাতিল করার জন্য স্বাগত জানান।
তবে নতুন নির্দেশে সবাই খুশি নয়।
নতুন নির্দেশের অধীনে, মঞ্জুর করা ভিসার সংখ্যা যখন প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সরকার নির্ধারিত আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রী লক্ষ্যমাত্রার ৮০ শতাংশে পৌঁছবে তখন ভিসা দেয়ার গতি কমবে ।
ভিকি থমসন হলেন গ্রুপ অফ এইটের প্রধান নির্বাহী, তার সংগঠন অস্ট্রেলিয়ার আটটি অভিজাত গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করে।
একটি বিবৃতিতে, তিনি বলেছেন যে নতুন নির্দেশনা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করতে পারে, এবং সেক্টরের আরও ক্ষতি করতে পারে।
২০২৩ সালের শেষের দিকে, লেবার সরকার আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের বিষয়ে নয়টি নিয়মের পরিবর্তন করেছে, তারপরে আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ক্যাপ করার প্রস্তাবিত বিল আনে।
বিলটি ডিসেম্বরে সংসদে পাস হতে ব্যর্থ হয়েছিল, কারণ কোয়ালিশন এবং গ্রিনস উভয়ই বিলটির বিরোধিতা করেছিল।
তবে ঘটনা যাইহোক, আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে চলমান বিতর্ক বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে রিডান্ডেন্সির বা স্টাফ ছাঁটাই হতে পারে এমন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের আয়ের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে।
অক্টোবরে, অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি স্টাফ ছাঁটাইয়ের ঘোষণা করেছে, কারণ এই বছর বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০০ মিলিয়ন ডলারের ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে।
একটি বিবৃতিতে, ন্যাশনাল টারশিয়ারি এডুকেশন ইউনিয়নের জাতীয় সভাপতি ডঃ অ্যালিসন বার্নস বলেছেন, ফেডারেল সরকারকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী বিধিতে পরিবর্তনের ফলে কেউ চাকরি হারাবে না এমন নিশ্চয়তা দিতে হবে।
বিরোধী জোটের অভিবাসন বিষয়ক মুখপাত্র ড্যান টেহানও নতুন নীতির সমালোচনা করেছেন।
মি. টেহান বলেন, "লেবার সবসময় ইমিগ্রেশন নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। ১৮ মাস আগে, তারা গর্ব করত যে তারা কতগুলি ভিসা ইস্যু করেছে, আর এখন আবাসন এবং বাড়ি ভাড়া সংকটের কারণ দেখিয়ে বলছে আমাদের দেশে এক মিলিয়নেরও বেশি লোক এসেছে।"
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ার বাটনে ক্লিক করুন।
আরও দেখুন
নতুন এসবিএস রেডিও অ্যাপ ডাউনলোড করুন
পাওয়া যাচ্ছে?
এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।
এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন