যুক্তরাষ্ট্রে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর শুল্ক কার্যকর, কোন ছাড় পেল না অস্ট্রেলিয়া

Steel Production At ThyssenKrupp Duisburg

DUISBURG, GERMANY - JANUARY 17: A worker oversees molten iron undergoing purification and alloying to become steel at the ThyssenKrupp steelworks on January 17, 2018 in Duisburg, Germany. ThyssenKrupp CEO Heinrich Hiesinger is seeking to merge the company's steel making unit with Tata Steel of India. The German economy grew 2.2 percent in 2017, its biggest growth rate since 2011. Economists see a strong outlook for 2018. (Photo by Lukas Schulze/Getty Images) Credit: Lukas Schulze/Getty Images

যুক্তরাষ্ট্রে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর শুল্ক কার্যকর হয়েছে, যেখানে অস্ট্রেলিয়ার জন্য কোনো ছাড় নেই। এটি দুই দেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের জন্য একটি বড় ধাক্কা। তবে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজি অস্ট্রেলিয়ার স্বার্থ রক্ষা করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।


"ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি অন্যায়। এটি দুই দেশের দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের পরিপন্থী এবং আমাদের ৭০ বছরের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের মূল চেতনার বিরোধী।"

প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজির এই কঠোর বক্তব্যের কারণ যুক্তরাষ্ট্রে অস্ট্রেলিয়ার স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম রপ্তানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া গত এক মাস ধরে ছাড় পাওয়ার চেষ্টা করছিল এবং বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রকে।প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেই ফোনে প্রধানমন্ত্রী আলবানিজিকে বলেছিলেন, অস্ট্রেলিয়ার জন্য ছাড় বিবেচনা করা হবে।

তবে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র কোনো বিশেষ সুবিধা দেয়নি।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগের মেয়াদে অস্ট্রেলিয়া একই ধরনের শুল্ক থেকে ছাড় পেয়েছিল।
এবার ট্রাম্প প্রশাসন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা কোনো দেশকেই ছাড় দেবে না। আগেরবার তারা অনেক মিত্র দেশকে ছাড় দিয়েছিল, কিন্তু এতে শুল্কের কার্যকারিতা কমে গিয়েছিল বলে তারা মনে করে
স্কট ফ্রেঞ্চ , ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের সিনিয়র অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ
কিন্তু ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের সিনিয়র অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ স্কট ফ্রেঞ্চ মনে করেন, এবার তেমন কিছু হবে না।

তিনি বলছেন, "এবার ট্রাম্প প্রশাসন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা কোনো দেশকেই ছাড় দেবে না। আগেরবার তারা অনেক মিত্র দেশকে ছাড় দিয়েছিল, কিন্তু এতে শুল্কের কার্যকারিতা কমে গিয়েছিল বলে তারা মনে করে।"

এই শুল্কের উদ্দেশ্য হলো মার্কিন শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়া, অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়ানো এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো।
আরও শুনুন
Bangla_Trump Tariff 120225 image

ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়া সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়াকে ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামের জন্য শুল্ক ছাড় দিলেন না ট্রাম্প

SBS Bangla

12/02/202508:26
খনি ও অনুসন্ধান কোম্পানিগুলোর সংগঠনের প্রধান নির্বাহী ওয়ারেন পিয়ার্স মনে করেন, অস্ট্রেলিয়ার জন্য কিছু করার সুযোগ ছিল না।

"২০১৭ সালে দেওয়া ছাড় পুরো শুল্ক নীতিকেই দুর্বল করে দিয়েছিল। তখন আমেরিকান কোম্পানিগুলো কম দামের পণ্য পেতে ছাড়প্রাপ্ত দেশগুলোর দিকে ছুটেছিল। এবার তাই কোনো ব্যতিক্রম রাখা হয়নি। অস্ট্রেলিয়া বা অন্য কোনো দেশ এতে কিছু করতে পারত না।"

তবে বিরোধী নেতা পিটার ডাটন একমত নন।

"অ্যান্থনি আলবানিজি ও কেভিন রাড পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোন কলের সুযোগও নিতে পারেননি। তাহলে কীভাবে কোনো চুক্তি করবেন? শুধু অস্ট্রেলিয়ানরাই নন, আমাদের বাণিজ্যিক অংশীদাররাও প্রধানমন্ত্রীকে দুর্বল ও অযোগ্য মনে করছে," বলেন তিনি।

তিনি মনে করেন, 'অন্য সরকার' হলে ভিন্ন পরিস্থিতি হতো।

অ্যান্থনি আলবানিজি বলেছেন, (যুক্তরাষ্ট্রের উপর) পাল্টা করা হবে না, কারণ এতে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আরেকটি ফোন কলে কথা বলার চেষ্টা করছেন।

শুল্ক নিয়ে টানাপোড়েন দুই দেশের জন্য অনেক কিছু ঝুঁকির মুখে দাড় করিয়েছে। যেমন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি, নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব, , মার্কিন সামরিক ঘাঁটি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি।

তবে ওয়ারেন পিয়ার্স মনে করেন, স্বল্প সময়ে শিল্পখাতের ওপর প্রভাব তেমন বড় হবে না।

"মানুষ যতটা ভাবছে, ততটা প্রভাব পড়বে না। যেহেতু সবাই একই নিয়মের মধ্যে পড়ছে, তাই প্রতিযোগিতার শর্তগুলো সবার জন্য সমান," বলেন তিনি।
আরও শুনুন
bangla_Trump Australia relation_220125 image

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে বড় পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন; অস্ট্রেলিয়ায় এর প্রভাব কী হতে পারে?

SBS Bangla

22/01/202508:35
অস্ট্রেলিয়া এখনো যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি চালিয়ে যাবে।

"যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য যদি নিজ দেশের স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম শিল্পকে রক্ষা করা হয়, তবে এটি সময়সাপেক্ষ হবে। অস্ট্রেলিয়া আপাতত রপ্তানি চালিয়ে যাবে, যদিও আমেরিকান কোম্পানিগুলো এখন বেশি দাম দিতে বাধ্য হবে। তবে দীর্ঘমেয়াদে আমাদের নতুন বাজার খুঁজতে হবে।"

কিন্তু এই অনিশ্চিত শুল্ক নীতির কারণে বিশ্ব বাজার অস্থির হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ড. ফ্রেঞ্চ।

"এই শুল্কের প্রভাব কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা বলা কঠিন। বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইন জটিল হওয়ায় এর সঠিক প্রভাব বোঝা মুশকিল, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে। আর অনিশ্চয়তা শেয়ার বাজারের জন্য ভালো নয়।"

ওয়ারেন পিয়ার্স সতর্ক করেছেন, বৈশ্বিক বাণিজ্য সমস্যার কারণে অস্ট্রেলিয়া ঝুঁকিতে রয়েছে।
বর্তমান বাণিজ্য যুদ্ধ অস্ট্রেলিয়ার জন্য ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে। কারণ এটি বিশ্ব অর্থনীতির সবচেয়ে বড় চালিকাশক্তিকে প্রভাবিত করতে পারে। যদি এই পরিস্থিতি চীন বা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মতো অঞ্চলে আঘাত হানে, তাহলে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতির ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে
ওয়ারেন পিয়ার্স, প্রধান নির্বাহী, খনি ও অনুসন্ধান কোম্পানিগুলোর সংগঠন
প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

এসবিএস বাংলার আরও  শুনতে ভিজিট করুন আমাদের 

আপনি কি জানেন, এসবিএস বাংলা অনুষ্ঠান এখন ইউটিউব এবং 
 পাওয়া যাচ্ছে?

এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।

এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন 

আর, এসবিএস বাংলার এবং ইউটিউবেও পাবেন। ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন চ্যানেল। উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায় 



Share